এই মাস আসলেই ব্যাংক একাউন্ট ধারীর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়, ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার কারণে। ভয়ের কোন কারণ নেই, একাউন্টে কত টাকা থাকলে কত টাকা কাটবে সরকার যা জানা জরুরি। যাদের ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট এসএনডি একাউন্ট ডিপিএস অ্যাকাউন্ট সঞ্চয় পত্র ক্রয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট বা লোন একাউন্ট রয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই ব্যাংক একাউন্ট থেকে সরকারের এনবিআর ও শুল্ক বিভাগ Excise Duty বা আবগারি শুল্ক কর্তন করে।
সেভিংস অ্যাকাউন্ট
জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে লেনদেনের উপর ভিত্তি করে ডিসেম্বর মাসেই এই একাউন্ট থেকে শুরু কর্তন করা হয়
ডিপিএস বা এফডিআর একাউন্ট
ডিপিএস বা এফডিআর একাউন্টের মেয়াদ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৫ বা ৬ বছর কিংবা আরো কম বেশি হতে পারে। এ ধরনের একাউন্টের শেষ হওয়ার পরবর্তী সময়ে একবার শুধু আবগারি শুল্ক কর্তন করা হয়।
সঞ্চয়পত্র
ব্যাংক একাউন্টের চেক দিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে হয়। সঞ্চয়পত্রের মেয়াদান্তে ব্যাংকে জমা হয় তাই ক্রয়ের বছর একবার আবার মেয়াদপূর্তির বছর একবার ব্যাংক একাউন্টের লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে আবগারি শুল্ক কর্তন করা হয়।
এছাড়াও ব্যাংক লোন ও ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রেও আবগারি শুল্ক শুল্ক কর্তন করা হয়।
ব্যাংক একাউন্টের সারা বছরে কোনো একটা সময়ে ব্যালেন্স বা স্থিতি যদি একটি নির্দিষ্ট সীমা স্পর্শ করে, তাহলেই এক্সাইজ ডিউটি বা আবগারি শুল্ক একাউন্ট হতে কর্তন করা হয়ে যাবে। তবে সারা বছরে যদি ব্যাংক একাউন্টের ব্যালেন্স যদি ১ লক্ষ টাকার নিচে থাকে কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হয় না।
যেমন ধরা যাক, আপনার হিসাবে ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক সময়ে আপনার পরিচিতি কেউ একজন ৯০ হাজার টাকা জমা দিলেন। এতে করে আপনার একাউন্টের স্থিতি গিয়ে দাঁড়াল ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। তো সেই ৯০ হাজার টাকা পরদিনই আপনি আবার উত্তোলন করে ফেললেন। এরপর সারা বছরে আর কখনো আপনার ব্যাংক একাউন্টের ব্যালেন্স ১ লক্ষ টাকার উপরে যায়নি। কিন্তু যেহেতু আপনার হিসাবের স্থিতি পুরো বছরে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে একবার ১ লক্ষ টাকার উপরে উঠেছিল তাই ডিসেম্বর মাসে আপনাকে প্রযোজ্য হারে অর্থাৎ ১৫০ টাকার আবগারি শুল্ক প্রদান করতে হবে। এখন কি বিষয়টা পরিস্কার হলো?
এবার আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর অর্থ মন্ত্রণালয় এর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ হতে আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য হার সম্পর্কে জেনে নিব।
১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা বছরের যেকোনসময় থাকলে ১৫০ টাকা এবং ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত থাকলে ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এ ছাড়া ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকায় ৩ হাজার টাকা; ১ কোটি টাকা থেকে ৫ কোটি টাকায় ১৫ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার ওপরে থাকলে ৪০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপ হয়।