প্রবাসে থেকে ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে করবেন নিজে ?
আপনি বিদেশে আছেন কিন্তু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই । কষ্ট করে উপার্জিত সকল অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন, দেশে যাওয়ার পর টাকা চাইলে সে সময় দেখা যায় তাদের কাছ থেকে টাকা পান না বা ঐ ভাবে সেভিং থাকে না , খরচ হয়ে যায় । দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি বিদেশ থেকেই ব্যাংক একাউন্ট খুলে সঞ্চয় করতে পারেন, যা দেশে যাওয়ার পর আপনার অবশ্যই কাজে আগবে । বেশ কিছু ব্যাংক অনলাইনে একাউন্ট খোলার সেবা নিয়ে এসেছে, যা মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই সম্ভব হয়ে থাকবে । প্রতিটি ব্যাংকের অনলাইনে একাউন্ট খোলার এপপ্স আছে, প্রতিটি ব্যাংকের একাউন্ট খোলার ধরণ প্রায় একই রকম । বর্তমান সময়ে দেশ বা বিদেশ কিংবা বিশ্বের যে কোন দেশ থেকে ব্যাংক একাউন্ট করা অনেকটা সহজ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকটা বিকাশ, রকেট বা নগদ একাউন্ট খোলার মত ।
বিদেশে হতে একাউন্ট খোলার জন্য যা লাগবে
ক) একটি বাংলাদেশী নাম্বার, আর সেটাতে রোমিং অপশন চালু থাকতে হবে । যদি রোমিং চালু না থাকে , দেশে থাকা আপনার পরিবারের সদস্যদের মাঝে মা, বাবা, ভাই, বোনের যেকারো নাম্বার হলেই হবে ও নিজের একটি ইমেইল বা জিমেইল ।
খ) আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা ন্যাশনাল আইডি ।
গ) নমীনির জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন ও তার সদ্য তোলা ছবি । নমীনি আপনি চাইলে আপনার পরিবারের যেকোন সদস্যদের দিতে পারেন । নমীনির কাজ হল, একাউন্ট ধারী মারা গেলে নমীনি একাউন্টে থাকা টাকা উত্তোলন করতে পারবে ।
ইসলামী ব্যাংক ঋণ নাকি সুদ মুক্ত ঋণের বিকল্প ইসলামিক ব্যাংক বিনিয়োগ নিন আপনিও
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক সুদী প্রথাতে লেনদেন করে থাকে, কিছু ইসলামী ব্যাংক রয়েছে তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা কেন্দীয় ব্যাংক যেহেতু সুদী কারবারে জড়িত তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ইসলামী ব্যাংক গুলো ১০০% সম্পূর্ণ সুদ মুক্ত সম্পন্ন নয়, তবে তারা চেষ্টা করছে । সুদ হতে যত দূরে থাকা যায় তত ভাল, যেহেতু ব্যাংক একাউন্টে লেনদেন অধিকাংশ সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে করে , তাই নিজের ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর ভিত্তি করে ইসলামী ব্যাংক বা অন্যান্য সুদী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারেন ।
বিদেশ থেকে ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা দিচ্ছে যে ব্যাংক
১) সিটি ব্যাংক Ekhoni Account Apps । সিটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে মাসিক ১ লাখ টাকার বেশি একাউন্টে লেনদেনের ক্ষেত্রে ইনকাম সোর্সের পেপার লাগবে, তবে মাসিক ১ লাখ টাকার কম লেনদেন করলে ইনকাম সোর্সের পেপার লাগবে না ।
২) ইসলামী ব্যাংক Cellfin App ।
৩) স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক SIBL Now App ।
উপরোক্ত এই তিন ব্যাংকের একাউন্ট অনলাইনে খোলার সাথেই একটিভ হয়ে যাবে ও লেনদেন করা যাবে ।
৪) সোনালী ব্যাংকের Sonali Esheba App দিয়ে । তবে এই ব্যাংকের এপ্স দিয়ে অনলাইনে একাউন্ট খুললে , খোলার তিন মাসের মধ্যে গ্রাহকদের সেই শাখায় গিয়ে বেশ কিছু পেপারস দিয়ে একটিভ করতে হয় ।
বিদেশ থেকে ব্যাংক একাউন্ট নিয়ন্ত্রণ ও চার্জ
Islami Bank এর ibbl ismart, City Bank এর City Touch, Social Islami Bank এর SIBL Now অ্যাপ্সের মাধ্যমে তাদের গ্রাহকদের বিদেশে বা দেশে থাকা অবস্থায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে লেনদেনের সুযোগ দিলেও সোনালী ব্যাংক এখন তা দিচ্ছে না । আর সকল ব্যাংকের একাউন্টে টাকার স্হিতির ওপর ভিত্তি করে একাউন্ট মেইনটেইন্স চার্জ বছরে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা + ১৫% সরকারি ভ্যাট কাটে ও SMS Banking চার্জ কেটে থাকে , তবে অনলাইন ব্যাংকিং ফ্রী, যদি গ্রাহক ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ও চেক বই নিয়ে থাকে ব্যাংকে গুলো চার্জ কাটে ।
মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
১) প্রথমেই আপনার পছন্দের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সার্ভার যুক্ত ভিপিএন ওপেন বাংলাদেশ সার্ভার কানেক্ট করে নিবেন, এর পর যেকোন ব্যাংকের এ্যাপস নামিয়ে ওপেন করে সেখানে একটি বাংলাদেশী নাম্বার দিতে হবে( আপনার সিমে রোমিং চালু না থাকলে দেশে থাকা পরিবারের সদস্য পিতা, মাতা, ভাই বা বোনের নাম্বার দিবেন) । আর সেই নাম্বারে একটি কোড যাবে, দেশে সিম থাকলে ইমু বা ফেসবুক ম্যাসেন্জারের মাধ্যমে কোড টি আপনার বিদেশে থাকা ফোনে সেন্ড করতে বলবেন ( এই প্রসেস ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে বা যত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় ভাল ) আর কোডটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার অ্যাপে দিয়ে দিবেন ।
২) এর পরবর্তীতে আপনার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র উভয় পাতার ছবি আপলোড করলে, অটোমেটিক সব ডিটেইলস অ্যাপ ব্যাংকের সার্ভারে পাঠিয়ে দিবে । এরপর আপনার নিজের একটি সেলফি তুলে নিবেন ।
৩) সবার শেষে নমীনির জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের ছবি ও নমীনির পাসপোর্ট সাইজের ছবি আপলোড করতে হবে । চাইলে নমীনি যেকোন সময় পরিবর্তন করা যায় ।
অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাই ? এমন ইচ্ছা থাকলে।
দেশের বাইরে থেকে এভাবে সহজেই একাউন্ট খোলা যাবে, একাউন্টে বিদেশ থেকে লেনদেন করতে হলে ইন্টারনেট ব্যাংক চালু করে নিতে হবে । যা বিদেশ থেকে চালু করা সম্ভব কিছু ব্যাংকের অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে , এটি পরবর্তীতে কোন পোস্ট শেয়ার করবো ।