ইসলামী ব্যাংক খিদমা ক্রেডিট কার্ড সুবিধা অসুবিধা ও চার্জ । Islami Bank Dual Currency Khidma Credit Card Charge Update

ইসলামী ব্যাংক ডুয়েল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ড

মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সাথে ক্রেডিট কার্ড বিষয়টি একটি প্রয়োজনীয় বিষয় দাঁড়াচ্ছে । আপনার হাতে যদি একটি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি পাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা । তবে সাথে সাথে আছে নানা ধরনের ফ্রি এবং চার্জ হয়, যে কারণে অনেকেই ক্রেডিট কার্ড নিতে ভয় পান । আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের ফ্রি এবং চার্জের ভয়ে ক্রেডিট কার্ড নিতে ভয় পান, তাহলে আপনাকে জানাবো আজ একটি ব্যতিক্রমধর্মী ক্রেডিট কার্ডের কথা । আপনার যদি একটি ক্রেডিট কার্ড প্রয়োজন থেকে থাকে এবং আপনি যদি একটি ক্রেডিট কার্ড নিতে চান তাহলে আপনি বিনা দ্বিধায় সিলেক্ট করতে পারেন ইসলামী ব্যাংকের খিদমা ক্রেডিট কার্ড ।

ইসলামী ব্যাংকের খিদমা ক্রেডিট কার্ডের এমন অনেক সুযোগ সুবিধা আছে যেটা বাংলাদেশের প্রচলিত অন্য ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে নেই ।  ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টি যাদের কাছে ক্লিয়ার না তাদেরকে বলছি, এটি হলো এমন একটি কার্ড যেটা দিয়ে আপনি এটিএম কার্ডের মত এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন, পারচেজ, ই কমার্স ইত্যাদি সকল ধরনের কাজ করতে পারেন । তবে পার্থক্য হলো এ জন‍্য আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা থাকতে হবে না বরং সেই টাকা ব্যাংক আপনাকে প্রদান করবে । দিন শেষে আসবে বিল যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে পরিশোধ করে দিতে হবে ।সময় মত বিল পরিশোধ করতে না পারলে আপনাকে অতিরিক্ত টাকা চার্জ দিতে হবে, কিন্তু এখানেই কিছুটা ভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে ইসলামী ব্যাংকের খিদমা ক্রেডিট কার্ড । 

 

খিদমা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কি করা যায় ? 
১) দেশ-বিদেশের যেকোন জায়গায় এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন 
২) পচ মেশিন ব্যবহার করে কেনাকাটা
৩)  ই-কমার্স ট্রানজেকশন 
৪) অ্যামাজন, আলী এক্সপ্রেস ইত্যাদি থেকে কেনাকাটা * ইউটিউব ফেসবুকে পোস্ট বুস্ট করা
৫) প্লে স্টোর থেকে এপপ্সের সার্ভিস কেনা ।
৬) অনলাইনে বাস ট্রেন বিমানের টিকেট ক্রয় ।
৭) এটিএম থেকে নির্দিষ্ট সীমার বেশি ২৫ শতাংশ নগদ উত্তোলন এ ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য ।
৮)  বিভিন্ন সুপার স্টোর থেকে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট ।
৯) বড় বড় রেস্তোরাঁ বা হোটেল এবং হসপিটাল এর বিল পরিশোধ করা যায় ।

 

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে বাৎসরিক চার্জ 
বছরে ১৮টি ট্রানজেকশন বা এক লক্ষ টাকা পরিমাণ ই-কমার্স বা পচ ট্রানজেকশন করলে কার্ডের বাৎসরিক ফি দিতে হবে না ।

 

ইসলামী ব্যাংক ঋণ নাকি সুদ মুক্ত ঋণের বিকল্প নিন আপনিও

 

ইসলামী ব্যাংক খিদমাহ ক্রেডিট কার্ড লিমিট
ক) প্রিয়রিটি প্লাটিনাম কার্ড লিমিট ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
খ)  প্লাটিনাম কার্ড লিমিট ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
গ) গোল্ড কার্ড লিমিট ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
ঘ) সিলভার কার্ড লিমিট ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত 
প্রতিটি কার্ডের লিমিটের অতিরিক্ত পরিমাণ টাকা এটিএম হতে উত্তোলন করলে ১,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট চার্জ যোগ্য ।

 

ISLAMI BANK খিদমা কার্ড ফি

 

সিলভার কার্ড ভ‍্যাট সহ
ইস‍্যু চার্জ ১,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট । 
মাসিক কার্ড মেইন্টেন্যান্স ফি ৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট ।
বার্ষিক ফি ১,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট ।
কার্ড রিপ্লেস ফি ২০০ টাকা
লেট চার্জ প্রেমেন্ট ৫০০ টাকা

 

গোল্ড কার্ড ভ‍্যাট সহ
ইস‍্যু চার্জ ২,০০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট
মাসিক কার্ড মেইন্টেন্যান্স ফি ১,০০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট । 
বার্ষিক ফি ২,০০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট ।
কার্ড রিপ্লেস ফি ৩০০ টাকা ।
লেট চার্জ প্রেমেন্ট ৫০০ টাকা

 

প্লাটিনাম কার্ড ভ‍্যাট সহ
ইস‍্যু চার্জ ২,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট
মাসিক কার্ড মেইন্টেন্যান্স ফি ১,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট । 
বার্ষিক ফি ২,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট ।
কার্ড রিপ্লেস ফি ৫০০ টাকা ।
লেট চার্জ প্রেমেন্ট ৫০০ টাকা

 

প্রিওরিটি প্লাটিনাম কার্ড ভ‍্যাট সহ
ইস‍্যু চার্জ ৩,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট
মাসিক কার্ড মেইন্টেন্যান্স ফি ২,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট । 
বার্ষিক ফি ৩,৫০০ টাকা + ১৫% ভ‍্যাট ।
কার্ড রিপ্লেস ফি ৭০০ টাকা ।
লেট চার্জ প্রেমেন্ট ৫০০ টাকা

 

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড বিশেষ সুবিধা
১) যে কোন ক্রেডিট কার্ডের বিল মাস সাপেক্ষে সম্পূর্ণ পরিশোধ করে দিতে হবে, আপনি যদি বিল এক পয়সাও বকেয়া রেখে দেন তবে আপনাকে জরিমানা দিতে হবে । অনেক সময় দেখা যায় ভুলক্রমে ১ বা ২ বিল বাকি থাকলেও সুদ  জরিমানা গুনতে হয় তবে খিদমা ক্রেডিট কার্ডে কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে । আপনার বিল যদি ১০০ টাকা বা তার চেয়ে কম বকেয়া থাকে তাহলে আপনাকে কোনো জরিমানা পরিশোধ করতে হবে না ।

২) যদি ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করতে দেরি করেন তবে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের জরিমানা গুনতে বা দিতে হবে যেমন কার্ড মেইনটেইন ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং আপনার আউটস্ট্যান্ডিং এর উপর মোটা অঙ্কের সুদ ।  তবে ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করতে দেরি হলে সেক্ষেত্রে লেট প্রেমেন্ট ফ্রি এবং কার্ড মেইনটেন্যান্স ফ্রি শুধু দিতে হবে, কিন্তু সেটা নির্দিষ্ট পরিমাণ যেকোন এমাউন্টের জন‍্য অন‍্যান‍্য ব্যাংকের মতো বেশি পরিমাণে নয় । এক্ষেত্রে ব্যাংক কোন প্রকার সুদ বা মুনাফা নিবে না ।

 

ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড বিল পরিশোধের সময়
হিসাব বিবরণী তৈরির তারিখ প্রত্যেক মাসের ২৭ তারিখের মধ‍্যে, যা কার্ড ব্যাবহারকারীর ঠিকানায় পৌঁছে যায়, এর পর হতে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ‍্যে বিল পরিশোধ করতে হবে।

 

কারা নিতে পারবেন ইসলামী ব্যাংকের খিদমা ক্রেডিট কার্ড ?
১) ইসলামী ব্যাংকের সাথে সেলারি একাউন্ট আছে এমন পারসন
২) কোন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান এমপ্লয়ী 
৩) ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, মোবাইল ফোন অপারেটর, কর্পোরেট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি কর্মী 
৪) প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা
সরকারি স্বায়ত্তশাসিত আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান অফিসার 
৫) কলেজ ও ইউনিভার্সিটির শিক্ষক
৬) ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সিএ, সিএমএ, সিএস প্রফেশনাল সার্টিফিকেট রয়েছে এমন পারসন
৭) ইসলামী ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট ক্লায়েন্ট
৮) ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট এর মালিক
৯) ইসলামী ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ব্রাঞ্চ ল্যান্ড ওনার
১০) আপনি যদি এই সকল ক্যাটাগরির মধ্যে নাও পড়েন তবে আপনি কি তোমাকে যে কাপ নিতে পারবেন সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণে এমাউন্ট ডিপোজিট রাখতে হবে ।

 

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের অন‍্যান‍্য চার্জ 
১) পিন রিকোয়েস্ট ফি ২০০ টাকা ।
২) কার্ড চেক ট্রানজেকশন ফি ৫০০ টাকা প্রত্যেক বার ।
৩) মাসিক হিসাব বিবরণী প্রথমবার সম্পূর্ণই ফ্রি, তবে দ্বিতীয় বার থেকে প্রতিবারের জন্য ১০০ টাকা চার্জ
৪)  ইন্টারনেট ব্যাংকিং সম্পুর্ন ফ্রী
৫) রিটার্ন চেক ফি ২০০ টাকা
৬)  সেলস ভাউচার রিটেইলার ফি ৫০০ টাকা 
৭)  ফান্ড ট্রান্সফার ফি ১৭৫ টাকা, প্রতিটি লেনদেনের জন্য ও সর্বোচ্চ ট্রানস্ফার ২৫০০০ টাকা  যা প্রত্যেক লেনদেনের জন্য প্রযোজ্য ।
৮) কার্ডের ৫০% পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করা যায়, প্রত্যেকটি ট্রানজেকশন ফি ১৫০ টাকা।
৯) ডুবলিকেট স্টেটমেন্ট ফি ৩০০ টাকা
১০) প্রতিটি কার্ডের লিমিটের অতিরিক্ত পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে ১,৫০০ টাকা চার্জ কর্তন যোগ্য ।
১১) সিআইবি প্রসেসিং ফি ১০০ টাকা ।
১২) সাপ্লিমেন্টারি কার্ড বার্ষিক ফি ৫০০ টাকা, তবে প্রথমটি ফ্রি ।

সরকারের নিয়ম অনুসারে ১৫% ভ্যাট প্রযোজ্য । এছাড়াও প্রতিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য হয়ে থাকে, ঠিক তেমনি ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য যা বছরে এক বার কাটা হবে । তবে ক্রেডিট কার্ড এর লিমিট ১ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকলে সে ক্ষেত্রে শুল্ক প্রদান করতে হয় না, এক লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে অবশ্যই আবগারি শুল্ক দিতে হয়। 

 

খিদমা ক্রেডিট কার্ডের আবেদনে প্রয়োজনীয় পেপারস Islami Bank BD
১)  সদ্যতোলা কালারফুল পাসপোর্ট আকারের দুই কপি ছবি ।
২)  জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ।
৩) টিন সার্টিফিকেট এর ফটোকপি ।
৪) বিজনেস কার্ড অথবা এমপ্লয়ী কার্ড ভিজিটিং কার্ড ।
৫) ব‍্যক্তি ভেদে পেপারস
ক)  চাকুরীজীবী যারা রয়েছে তাদের জন্য সেলারি  সার্টিফিকেট এবং ৬ বা ১২ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ।
খ) যারা ব্যবসায় রয়েছেন তাদের ব্যবসার বৈধ ট্রেড লাইসেন্স এবং এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ।
গ) Self Employed (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার প্রফেশনাল ডিগ্রী রয়েছে এমন)  ডিক্লারেশন অফ ইনকাম অন পারসন লেটারহেড প‍্যাড ।

 

ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার মাসিক সর্বনিম্ন আয়ের যোগ্যতা IBBL

 

সরকারি চাকুরীজীবী ও প্রাইভেট কোম্পানির চাকুরীরজীবীর যোগ্যতা
ক) সিলভার কার্ড নিতে হলে মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ২০,০০০ টাকা হতে হবে ।
খ) গোল্ড কার্ড নিতে হলে মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ৫০,০০০ টাকা হতে হবে ।
গ) সিলভার কার্ড নিতে হলে মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ১,০০,০০০ টাকা হতে হবে ।

 

ব‍্যবসায়ীর যোগ্যতা
ক) সিলভার কার্ড নিতে হলে মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ৫০,০০০ টাকা হতে হবে ।
খ) গোল্ড কার্ড নিতে হলে মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ১,০০,০০০ টাকা হতে হবে ।
গ) সিলভার কার্ড নিতে হলে মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ১,৫০,০০০ টাকা হতে হবে ।

 

বিস্তারিত জানতে
ব্যাংকের যেকোনাে শাখায় যােগাযোগ করুন
Islami Bank Bangladesh Help line
নাম্বার : ০২-৮৩৩১০৯০ অথবা ১৬২৫৯
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড

error: Content is protected !!